ইসলামের বিবাহ কি ব্যাবিচারের নামান্তর???

লুলাইতো পোস্ট :p :p :p ---দয়া করে সময় নিয়ে পুরো পোস্টি পড়বেন, একান্ত অনুরোধ। আমাদের গ্রুপে একজন বালক নাস্তিক এলিফেটিক হাইড্রোকার্বন -এর আবির্ভাব ঘটেছে, তিনি একজন প্রাক্তন হানাফী মুমিন, তাই তার বক্তবের মধ্যে হানাফী মাজহাবের কিছু মাসআলা সহ পোস্ট দিয়েছিলেন কিছু দিন আগে,  তিনি ইসলামের বিয়েকে ব্যাবিচারে রুপান্তর
করার জায়েজ পন্থা খুজে পেয়েছেন আর আমাদের মাঝে বর্ননা করেছেন, চলুন দেখি তার বর্ননাটি

-----------------------------------------------------------
ইরানে অধিকাংশ মুমিন শিয়া। ওবার মুতাহ বিয়ে হালাল।

মুতাহ বিয়ে মানে হল , আপনি একটা মেয়েকে কিছু টাকা দিলেন , তার সাথে বিয়ে করলেন , এবং ৩ দিনের ও কম সময়ে চাইলেই ওকে তালাক দিবেন ।সহজ মানে হল , আপনি তাকে টাকা তথা দেনমোহর দিবেন এরপর সেক্স করবেন। এবং টাকা দেওয়ার সময় চুক্তি করে নিবেন যে কতক্ষনের বিয়ে এটা ।যেমন ধরুন আপনি মেয়েটার সাথে ২ ঘনটা মজা নিতে চান তাহলে ২ ঘনটার জন্য তার সাথে বিয়ের চুক্তি করবেন। এটা ইরানে রাষ্ট্রীয়ভাবেই বৈধ , এবং এতে কোন গুনাহ আছে বলে তারা মনে করে না। সাহাবীরা নিজেরা এই কাজ করেছেন বলে এটাকে তারা সাহাবিদের করা পবিত্র কাজ হিসেবে ভাবে ।

অর্থাৎ বৈধ পতিতাবৃত্তি ।

এতো গেল শিয়াদের নৈতিকতা(?) এবার সুন্নি হিসেবে আপনি ব্যাভিচার করতে পারবেন কিনা সেটা বলি ।প্রথমে এমন একটা মেয়ে জোগাড় করুন যার সাথে আপনি ব্যাভিচার করতে চান । এরপর আপনার ২ জন বন্ধু জোগাড় করুন যাদের বয়স ১৫ এর উপরে । কারন ১৫ এর উপরেই হানাফি মাজহাবে পুরুষ সাবালক হিসেবে সাক্ষী দেওয়ার উপযুক্ত হয়ে যাবে ।
মেয়ে যদি না পান তবে পতিতালয়ের পতিতাও জোগাড় করতে পারেন সমস্যা নেই । এবার প্রথমে আপনার ওই জোগাড় করা মেয়েকে তার দেন মোহর দিন ।

দেন মোহর কি হতে পারে?? হা হা , দেন মোহর আপনি ১০০ টাকা দিলেও চলবে , এমনকি যদি কুরআনের ২ টা সুরা ও শিখাই দেন তবে সেটাও দেনমোহর হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে ।
এরপর ইজাব কবুল । মানে বিয়ে পরিয়ে দেওয়া হবে ওই ২ জন সাক্ষী এর উপস্থিতিতে ।


শেষ , কেল্লা ফতেহ , এরপর আপনি ওই মেয়ের সাথে যা ইচ্ছা তা করলেন , ৪ দিন ৫ দিন করার পর শুধু "তালাক" শব্দটা উচ্চারন করলেই তালাক হয়ে যাবে। তার প্রতি বলবেন , আমি তোমাকে তালাক দিলাম ।শেষ নিলেন মজা, করলেন সেক্স পুরাই ইসলাম সম্মত নিয়মে !!


এখানে জানার ব্যাপার , হানাফি মাজহাব আপনাকে এই পদ্ধতি শর্তেই ফলো করতে দিবে ।সেটা হল, আপনার এবং আপনার সেক্স পার্টনার এর আর্থিক স্ট্যাটাস এক হতে হবে ।


যদি স্ট্যাsটাস এক হয় তবে সেই মেয়ে তার অভিভাবক এর অনুমুতি ছাড়াই আপনার সাথে এই বিয়ে করতে পারবে , সেখত্রে কুফু হয়ে যাবে ।

আর যদি আর্থিক অবস্থা উপর নিচ হয় তবে বিয়ে বাতিল হয়ে যাবে।সুতরাং হানাফি এবং সুন্নি মতবাদ অনুসারে ইসলাম সম্মত ভাবে ব্যাভিচার করতে আপনাকে যা যা সংগ্রহ করতে হবে,১/ আপনার সাথে একি আর্থিক স্ট্যাটাস সম্পন্ন মেয়ে ।২/ ১৫ বছর এর উরধে ২ জন সাক্ষী , মুসলিম এবং পুরুষ ।৩/ কমপeক্ষে ১০০ টাকা দেন মোহর কিংবা এরকম কিছু , ২ টা সুরা মুখস্ত থাকলেও চলবে।৪/কোন ধরনের কাবিননামা কিংবা চুক্তিপত্র কিংবা লিখিত ডকুমেন্ট এর কোনরকম প্রয়োজনীয়তা নেই ।৫/ সেক্স করার পর তাকে বলবেন যে তোকে তালাক দিলাম ।৬/একি মেয়ের সাথে যদি বারবার করতে চান তবে তালাক না দিয়ে লটকাই রাখবেন । আর যদি তালাক দেন তবে এক মেয়ের সাথে ২ বার করতে পারবেন না।২ বারের বেশি করতে হলে হিল্লা বিয়া টাইপ ঝামেলা হবে।৭/ এই মেয়ের সাথে যে সেক্স করলেন , কিংবা বিয়ে করলেন তার জন্য আপনার ২য় কিংবা ৩য় বিয়ে কিন্তু থেমে যাবে না । কারন ইসলামে ২য় বিয়ে করার জন্য ১ম বউয়ের অনুমতির কোন প্রয়োজন নেই ।


--------------------------------------------------------------


 তার উদ্দেশ্য ধর্ম নৈতিকতার ভিত্তি নয় এটা প্রমাণ করা, এবার আসুন দেখি এই লুলাইতো পোস্টের বিনোদন মূলক উক্তি গুলি এবং কিছু শিক্ষামূলক জবাব = ইসলাম ধর্মের নৈতিকতা:



১  নম্বর পয়েন্ট: ইরানে অধিকাংশ মুমিন শিয়া। ওবার মুতাহ বিয়ে হালাল।

=> ইরান মুসলামনদের জন্য দলিল নাকি কুরআন- হাদিস দলিল??? মিয়া আছে কোন দেশে, ইরানে নাকি বাংলাদেশ???বিশেষ কারণ মুতা বিবাহ সাময়িক সময়ের জন্য হালাল ছিল কিন্তু পরবর্তিতে সেই হুকুম মানসুখ হয়ে গেছে তার মানে মুতা বিবাহ হারাম করা হয়েছিল, হাদিস থেকে সত্যতা যাচাই করি,

রেফারেন্স: হযরত আলী (রা)হতে বর্ণিত তিনি বলেন রাসূল (স) খায়বরের দিন মুতয়া বিবাহ আর গাধার গোশত হতে নিষেধ করেছেন। সহীহ মুসলিম:৩৩০৪ সুনানে নাসাঈ-৩৩৬৭ এছাড়া ৩৩৬৬ এবং ৩৩৬৮ নং হাদীসে এ বিষয়ে আ‍‍লোকপাত করা হয়েছে।

২ নম্বর পয়েন্ট: প্রথমে এমন একটা মেয়ে জোগাড় করুন যার সাথে আপনি ব্যাভিচার করতে চান ।

=> ইসলামে ব্যাবিচারকে সাপোর্স্ট করে না, এটা বড়পাপ গুলোর মধ্যে অন্যতম। যদি কেউ দেখাতে পারেন যে ইসলাম ব্যাবিচারকে হালাল বলেছে তবে আজ থেকে নাস্তিক হয়ে যাবো।



৩  নম্বর পয়েন্ট:  ১৫ এর উপরেই হানাফি মাজহাবে পুরুষ সাবালক হিসেবে সাক্ষী দেওয়ার উপযুক্ত হয়ে যাবে।

=> বিশিষ্ট তর্কবাগিসের ভুলসমূহের মধ্যে এইখানে একটা বর্ননা তিনি করেছেন, হানাফী মাজহাবে নাকি ১৫ বছরের উপরে সাবালক হয় :p  জিজ্গাস করেছিলাম “বালকের সাক্ষি দিয়ে বিবাহ সম্ভব???”

জনাব উত্তর দিছেন, “বালকের নয়, বালেগের সাক্ষী দিয়ে বিয়ে সম্ভব। হানাফি মাজহাব মতে পুরুষ ১৫ বছরে বালেগ হয়। রেফারেন্স চাইছিলাম ‘জবাবে দাত ক্যালাইয়া কইলো =D  “হা হা হা হাহা হা হা, মাজহাব এর উধ্রিতি ছাড়া হাদিস থেকে কি আপনি বালেগ হওয়ার নির্ধারিত বয়সের উল্লেখ করতে পারবেন ??”

তাহলে দাড়াইলো নিজে না জানলে অন্য কেউ জানতে পারবে না, তার মতানুষারে :/ , বিষয়টা বুঝিয়ে বলি. উনি বলেছেন বালেগের বয়স কতহবে তা নাকি শুধুমাত্র মাজহাবেই আছে, কোন হাদিসে নাই। ভাইরে না জানলে সহজ বাংলায় একটা কথা আছে “জানি না”- যাইহোক আজাইরা প্যাচাল না পাইরা হাদিসের মধ্যে বালক, বালগ, আর যুবকের বয়স কত সেটা খোজার চেস্টা করি...

# ইসলামে বালক বলাহয় ৬ বা ৭ বছরের ছেলেকে রেফা: .....সকলে আমাকেই নামায আদায়ের জন্য তাদের সামনে এগিয়ে দিল। অথচ তখনো আমি ছয় কিংবা সাত বছরের বালক...- বুখারী:৩৯৭১)

# আর বালেগ বলাহয় ৭-১৪ বছরের ছেলেকে বয়সের সবর্চ্চো স্তর হলো ১৪ বছর, আর ১৫ বছরে হয় যুবক,রেফা: বুখারী: ২৪৮৮ উবায়দুল্লাহ ইবনু সাঈদ (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, উহুদ যুদ্ধের দিন রাসূল(স:) এর কাছে তাকে (ইবনু উমরকে) পেশ করলেন, তখন তিনি “চৌদ্দ বছরের বালক”। (ইবনু উমর বলেন) তখন তিনি আমাকে (যুদ্ধে গমনের) অনুমতি দেননি। পরে খন্দকের যুদ্ধে তিনি আমাকে পেশ করলেন এবং অনুমতি দিলেন। তখন আমি “পনের বছরের যুবক”।...

নিজেই বালক অবস্থানে আছে নাস্তিকতার ক্ষেত্রে আবার ইসলাম নিয়া সমালোচনা করে :P


৪  নম্বর পয়েন্ট: মেয়ে যদি না পান তবে পতিতালয়ের পতিতাও জোগাড় করতে পারেন সমস্যা নেই,

=> কেন জনাব? দেশের মেয়ে কি সব ইন্ডয়া পাচার হইয়া গেছে??? :p  আরো বিনোদন পতিতার বিষয়টা, পতিতারা কি ছেলে?? :p :p :p জনাবের উক্তিটা আবার লক্ষনিও।। কোন সুস্থ মস্তিস্কের মানুষ পতিতালয় যায়??? না পতিতাদের বিয়ে করে?? যাইহোক পতিতাদের বিয়ের সম্পর্কে কোরআন কি বলছে যেনে নেই,

রেফারেন্স: আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি স্বাধীন মুসলমান নারীকে বিয়ে করার সামর্থ্য রাখে না, সে তোমাদের অধিকারভুক্ত মুসলিম ক্রীতদাসীদেরকে বিয়ে করবে। আল্লাহ তোমাদের ঈমান সম্পর্কে ভালোভাবে জ্ঞাত রয়েছেন। তোমরা পরস্পর এক, অতএব, তাদেরকে তাদের মালিকের অনুমতিক্রমে বিয়ে কর এবং নিয়ম অনুযায়ী তাদেরকে মোহরানা প্রদান কর এমতাবস্থায় যে, তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবে-ব্যভিচারিণী কিংবা উপ-পতি গ্রহণকারিণী হবে না- সূরা নিসা:২৫


লক্ষনিয়: শেষের লাইনে,  “ব্যভিচারিণী কিংবা উপ-পতি গ্রহণকারিণী হবে না”

পন্ডিত মশাই কোখায় পতিতাদের বৈধতা পাইলো ইসলামে সেটা তিনিই ভাল জাননে, আমি বা কোন মুসলমান আগে কখনো শুনেছিন কি না দয়া করে কমেন্টে জানান।


৫  নম্বর পয়েন্ট: আপনার সাথে একি আর্থিক স্ট্যাটাস সম্পন্ন মেয়ে ।

=> জনাব গরিবের মেয়ের সাথে কি ধনীর ছেলের বিয়ে হয় না??? বা গরিবের ছেলের সাথে ধনীর মেয়ের বিয়ে হয় না??? এমন ওহি আপনি কই পাইলেন??? আর ইসলাম আর্থিক স্টাটাসের চেয়ে দ্বীনদারীকে বেশি পছন্দ করে।

রেফারেন্স: বুখারী শরীফ: ৪৭১৯:  হযরত আবূ হুরাইরা (রা:) থেকে বর্নিত। নবী (স:) বলেন. চারটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে শাদী করা যায়- তার সম্পদ, তার বংশমর্যাদা, তার সৌন্দর্য ও তার দ্বীনদারী। সূতরাং দ্বীনদারীকেই প্রধান্য দেবে। অন্যথায় তুমি ক্ষতিগ্রস্থ হবে।


৬ নম্বর পয়েন্ট:  দেন মোহর কি হতে পারে?? হা হা , দেন মোহর আপনি ১০০ টাকা দিলেও চলবে , এমনকি যদি কুরআনের ২ টা সুরা ও শিখাই দেন তবে সেটাও দেনমোহর হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে ।

=> বয়ান কারী কোথায় এই ১০০ টাকা পাইলেন আর কোথায় কুরআনের দুইটা সূরা পাইলো আল্লাহই ভাল যানেন, রেফারেন্স চাইছিলাম, আর বলেছিলাম যে এটা কি সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কিনা, জবাব দিয়েছে সকালে, দেখে নেই তার জবাব,

4829. It is related that Sahl said, "A woman offered herself to the Prophet, may Allah bless him and grant him peace,and a man said, 'Messenger of Allah, marry her to me.' He asked, 'What do you have?' He answered, 'I have nothing.' He said, 'Look for something, even if it is an iron ring.' He went and then came back and said, 'No, by Allah, I did not even find an iron ring, but I have this waist-wrapper and she can have half of it.'" Sahl said, "He did not have a cloak. The Messenger of Allah, may Allah bless him and grant him peace, said, 'What will she do with your waist-wrapper? If you wear it, she will have none of it, and if she wears it, you will have none of it.' The man sat down for a long time and then got up. The Messenger of Allah, may Allah bless him and grant him peace, saw him and called him or commanded someone to call him. He asked him, 'What do you know of the Qur'an?' He replied, "I know this sura , that sura , and that sura ," and he named a number of suras . The Prophet said, 'I have married you to her for what you know of the Qur'an (i.e. for teaching her that).'"

এর অনুবাদটা আমরা একটু দেখি, আসলেইকি সবার ক্ষেত্রে তার দেয়া দেনমহরের যুক্তি কতটুকু সঠিক,

কুতায়বা (রহঃ) সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একজন মহিলা রাসূলল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -এর কাছে এসে বলল, ইয়া রাসূলল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! আমি আমার জীবনকে আপনার হাতে সমর্পণ করতে এসেছি। নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার দিকে তাকালেন এবং সতর্ক দৃষ্টিতে তার আপাদমস্তক লক্ষ্য করলেন। তারপর তিনি মাথা নিচু করলেন। যখন মহিলাটি দেখলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার সম্পর্কে কোন ফয়সালা দিচ্ছে না, তখন সে বসে পড়ল। এরপর নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -এর সাহাবীদের মধ্যে একজন দাঁড়ালেন এবং বললেন, ইয়া রাসূলল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! যদি আপনার শাদীর কোন প্রয়োজন না থাকে, তবে আমার সাথে একে শাদী দিয়ে দিন। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কাছে কি আছে? সে উত্তর করলো- না, আল্লাহর কসম, ইয়া রাসূলল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! আমার কাছে কিছুই নেই। রাসূলল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি তোমার পরিবার-পরিজনের কাছে ফিরে গিয়ে দেখ। কিছু পাও কিনা। এরপর লোকটি চলে গেল। ফিরে এসে বলল, আল্লাহর কসম! আমি কিছুই পাইনি। এরপর রাসূলল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আবার দেখ, লোহার একটি আংটিও যদি পাও। তারপর লোকটি আবার ফিরে গেল। এসে বলল, ইয়া রাসূলল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! তাও পেলাম না, কিন্তু এই যে আমার তহবন্দ (শুধু আছে)। (রাবী) সাহল (রাঃ) বলেন, তার কাছে কোন চাঁদর ছিল না। লোকটি এর অর্ধেক তাকে দিতে চাইলেন। তখন রাসূলল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, সে তোমার তহবন্দ দিয়ে কি করবে? তুমি যদি পরিধান কর, তাহলে তার কোন কাজে আসবে না আর সে যদি পরিধান করে, তবে তোমার কোন কাজে আসবে না। তারপর বেশ কিছুক্ষণ লোকটি নীরবে বসে থাকল। তারপর উঠে দাঁড়াল। সে যেতে উদ্যত হলে নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে ডেকে আনলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কি পরিমাণ কুরআন শরীফ মুখস্থ আছে? সে বলল, আমার অমুক অমুক সূরা মুখস্থ আছে এবং সে হিসাব করল। নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, এগুলো কি তোমার মুখস্থ আছে? সে বলল, হাঁ। নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যে পরিমাণ কুরআন তোমার মুখস্থ আছে তার বিনিময়ে তোমার কাছে এই মহিলাটিকে (শাদী) দিলাম।

জনাব হয়তো খুইজা ২ জায়গায় পাইছেন হাদিসটা, কিন্তু আমি আরো রেফারেন্স দিতে পারি সহীহ বুখারীতেই ৪৭১৬, ৪৭৪৬, ৪৭৫০, ৪৭৫৬, ৪৭৫৯, ৪৮৬৫, ৪৭৭২ আরো হাদিস গ্রন্হে হাদিসটা রয়েছে।

লক্ষনিয়: দেখেনেই নবী (স:) সেই সাহাবীর সম্পত্তি সম্পর্কে কয়বার প্রশ্ন করেছেন এবং সাহাবী কি উত্তর দেয়েছিলেন,  
১. নবী (স:) আবার জিজ্ঞাসা করলেন তোমার কাছে কি আছে? সে প্রথমে বললেন যে কিছুই নাই।
২. নবী (স:) আবার জিজ্ঞাসা করলেন লোহার আংটিও আছে কিনা, সে বললো নাই।
৩. নবী (স:) আবার জিজ্ঞাসা করলেন কিছু আছে কিনা, সাহাবী বললেন একখানি কাপড়ের টুকরা পেলো আছে যা সে নিজেই ব্যাবহার করে, এবং যেটা বিনিময়ের যোগ্য নয়।

তার পর সাহাবী যখন দারিদ্রতার কারণে কিছুই পেলো না, তখন কস্টে মজলিস ত্যাগ করার জন্য তৈরী হলো, তখন নবী (স:) বলেছেন যে তোমার কি কোন সূরা মুখস্ত আছে কিনা।।

এখন আমাদের নিকট ব্যাবিচার প্রতিস্ঠাকারী পন্ডিতের কাছে প্রশ্ন, এমন একজন সুস্থ লোক দেখান যে উপরের হাদিসের প্রক্ষিতে কুরআনের সূরার বিনিময়ে বিবাহ করার যোগ্য??? তাহলে কি এটা সবার জন্য প্রযোয্য??? আশাকরি পাঠকগন বুঝতে পেরেছেন তার এই ব্যাবিচারের মাধ্যমে কে কে বৈধ।।

এখন দেখি ১০০ টাকার ব্যাপারে, তিনি বলেছেন হানাফী মাজহাবে নাকি ১০০ টাকার বিনিময়ে মহর সাব্বস্থ হয়, আমি একটাও হানাফী কিতাবে খুজে পাইনি তার এই কথাটি, আমি সর্বনিম্ম দেনমহর খুজতে গিয়ে পেয়েছি ১০ দিরহাম বা ২.৬৩ অথবা ২.৭৫ তোলা রূপা, (দেখুনঃ ফাতওয়ায়ে আলমগীরী, আহসানুল ফাতাওয়া, আযীযুল ফাতাওয়া) একই ফতোয়া আছে (দারা কুত্‌নী, সূত্রঃ হিদায়া, ২য় খন্ড, পৃ. ৩০৪).... আর ২.৬৩ তোলা রুপার বর্তমান মূল্য ৪২২২ টাকা ।।।

আজকের রুপার দামটা দেখেনেই এই সাইট থেকে, http://www.goldrate24.com/gold-prices/asia/bangladesh/

আমারতো মাথাই নস্ট হবার উপক্রম, কোথায় ১০০ টাকা আর কোথায় ৪২২২ টাকা :P পাঠকদের অবস্থা কি তারাই ভাল জান,

উক্ত ফতোয়ার ব্যাপারে কোন হাদিস আছে কি?? চলুন দেখি,

রেফারেন্স: হযরত জাবের (রা:) থেকে বর্নিত, নবী (স:) বলেছেন, ১০ দিরহামের নিচে মহর নেই- (দুরুল মুখতার, মোহর অধ্যায়:২৩২পৃ:) একই ধরনের হাদিস আছে হযরত আলি (রা:) এর বর্ননা থেক যা মুসান্নাফে আব্দুর রাজাকে বর্নিত হয়েছে।।।


এখন দেখি হুজুর পাক (স:) এর স্ত্রী আয়শা (রা:) এর মহর কত ছিল,

মুসলিম শরিফ:৩৩৫৮ ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও মুহাম্মাদ ইবনু আবূ উমর মাক্কী (রহঃ) আবূ সালামা ইবনু আবদুল রহমান (রহঃ) বলেন, আমি নাবী (সা:)-এর সহধর্মিনী আয়িশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, রাসুলুল্লাহ (সা:) -এর বিবাহে মাহর কি পরিমাণ ছিল? তিনি বললেন, তাঁর বিবিগণের মাহরের পরিমাণ ছিল বার উকিয়া ও এক নাশ। তিনি বললেন, তুমি কি জান এক নাশ এর পরিমাণ কতটুকু? আমি বললাম, না- তিনি বললেন, এক নাশ এর পরিমাণ হল আধা উকিয়া। সুতরাং মোট হল পাচ শত দিরহাম। এই ছিল রাসুলুল্লাহ (সা:) এর সহধর্মিনীগণের মাহর।


৭ নম্বর পয়েন্ট:   ৪ দিন ৫ দিন করার পর শুধু "তালাক" শব্দটা উচ্চারন করলেই তালাক হয়ে যাবে।।

=> বিশিস্ট ব্যাবিচার ফতোয়াদানকারী নিজে বিয়ে করেছেন কিনা বা উক্ত নিয়মে ব্যাবিচার করেছেন কিনা সেটা আমার জানা নাই। আর এটাও জানা নাই যে সে কিভাবে তালাক দিয়েছেন।। ইসলামে তালাক বললেই তালাক সাবস্ত হয় না, তালাকের সাথে ইদ্দতের এর সম্পর্ক আছে,


রেফারেন্স: ০১. আর তালাকপ্রাপ্তা নারী নিজেকে অপেক্ষায় রাখবে তিন হায়েয পর্যন্ত। [সুরা বাকারা: ২২৮]
০২. আর যখন তোমরা স্ত্রীদেরকে তালাক দিয়ে দাও এবং তারপর তারাও নির্ধারিত ইদ্দত পূর্ন করতে থাকে ....[সুরা বাকারা: ২৩২]

শুধু ইদ্দত নয় সেই ইদ্দতের সময় খরচও দিতে হবে,

রেফারেন্স: আর তালাকপ্রাপ্তা নারীদের জন্য প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী খরচ দেয়া পরহেযগারদের উপর কর্তব্য। [সুরা বাকারা: ২৪১]

আর তালাকের সাথে মহরানার একটি সম্পর্ক আছে, দেখে নেই পবিত্র কুরআন কি বলছে মহরানার পরিমান: স্ত্রীদেরকে স্পর্শ করার আগে এবং কোন মোহর সাব্যস্ত করার পূর্বেও যদি তালাক দিয়ে দাও, তবে তাতেও তোমাদের কোন পাপ নেই। তবে তাদেরকে কিছু খরচ দেবে। আর সামর্থ্যবানদের জন্য তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী এবং কম সামর্থ্যবানদের জন্য তাদের সাধ্য অনুযায়ী। যে খরচ প্রচলিত রয়েছে তা সৎকর্মশীলদের উপর দায়িত্ব। [সুরা বাকারা: ২৩৬]

লক্ষনিয়: ১.মহর সাবস্ত হওয়ার পূর্বে তালাক দিলেও মেয়েদেরকে কিছু খরচ দিতে হবে,
২.আর এটা সামর্থ অনুযায়ী, যদি কটিপতি হয় তবে কুরআনের আয়াতের বিনিময়ে বা ১০ দিরহামের বিনিময়ে দেনমহর সাব্বস্ত হবে না।।


গতকাল আলোচনার সময় তাকে কিছু প্রশ্ন করেছিলাম, প্রশ্নগুলো একটু দেখে নেই,

১. বালকের শাক্ষি দিয়ে বিবাহ সম্ভব???---উত্তর পাইনি

২. আর তালাক বললেই তালাক হয়ে যায় ???---রেফারেন্স দিয়েছেন, When they have fulfilled their term, there is no blame on you if they dispose of themselves in a just and reasonable manner. ---- [Qur’an 2:234]পাঠকরাই বলুন কি চাইলাম আর কি দিল?? চাইলাম ভাত দিল কলম-খাতা, :P দেখেনেই আয়াতের অনুবাদটি, --“তারপর যখন ইদ্দত পূর্ণ করে নেবে, তখন নিজের ব্যাপারে নীতি সঙ্গত ব্যবস্থা নিলে কোন পাপ নেই”

৩. ইজাব আর কবুল কি জিনিষ???---উত্তর পাইনি

৪.কমপক্ষে ১০০ টাকা দেন মোহর কিংবা এরকম কিছু , ২ টা সুরা মুখস্ত থাকলেও চলবে।---এটাকি সবার ক্ষেত্রে প্রজোয্য??? জাবাব দিয়েছিল উপরের হাদিসটি 4829. It is related that Sahl said.......


পরিশেষে বলতে হয় এই লেখাটার সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য ইসলামী বিবাহকে ব্যাবিচারে রুপান্তর করা, আর ইসলামে ব্যাবিচারের উদ্দেশ্যে বিবাহ করা নিষিদ্ধ, যেমন কুরআনে বলা হয়েছে, “.....এদের ছাড়া তোমাদের জন্যে সব নারী হালাল করা হয়েছে, শর্ত এই যে, তোমরা তাদেরকে স্বীয় অর্থের বিনিময়ে তলব করবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য-ব্যভিচারের জন্য নয়”-সূরা নিসা:২৪



পবিত্র কুরআনে আল্লাহ পাক বলেন, “বরং আমি সত্যকে মিথ্যার উপর নিক্ষেপ করি, অতঃপর সত্য মিথ্যার মস্তক চুর্ণ-বিচূর্ণ করে দেয়, অতঃপর মিথ্যা তৎক্ষণাৎ নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। তোমরা যা বলছ, তার জন্যে তোমাদের দুর্ভোগ। [সুরা আম্বিয়া: ১৮]

সার্বিক সহযোগিতায়ঃ

3 comments:

  1. ভাই হানাফি মাঝাবের যেই কথা গুলো লেখছেন তা তো ঠিক না ।কারন আমি আমার জম্ন ধরে হানাফি মাজাবে আপনার
    লেখা কথা গুলো শুনিনাই। আপনি পাইলেন কই আমি এক জোন হানাফি মাজাবের লোক আপনি ভালো ভাবে যেনে তার পরে লিখবেন। আমি তাবলিগ ও করি ?

    ReplyDelete
  2. রেফারেন্স দেওয়া আছে, দয়া করে রেফারেন্সগুলো দেখুন তাহলে আর শুনতে হবে না। ধন্যবাদ

    ReplyDelete
  3. ভাই ওনার মাথার ফিতা পেচ খাইছে।।।।।
    নাইলে এমন কথা কেও বলতে পারে না।।।।।

    ReplyDelete

Thanks for comments