অজু ও তায়াম্মুম গুরুত্ব পূর্ণ মাসয়ালা

নামাযের জন্য অজু করা অবশ্যই শর্ত।অজু ব্যতিত নামাযই হয় না।তাই আমাদের উচিত সবার ভাল করে অজু করিয়া নামাযে শরিক হওয়া।নিম্নে অজু সম্পর্কীয় ক্বোরান,হাদীসের বর্ননা ও বিভিন্ন মাসয়ালা আলোচনা করা হইল।
*হে মুমিন গন,যখন তোমরা নামাযের জন্য উঠ,তখন স্বীয় মুখমন্ডল,হস্ত সমুহ কনুই পর্যন্ত,সম্পুর্ন মাথা এবং পদযুগল
গীট সহ ধৌত করে নাও।*মায়েদা-৬।
১. হযরত আবু হুরায়রা(রাঃ) বলেন,
রাসুল(সঃ) বলেছেন,কিয়ামতের দিন যখন আমার উম্মতকে ডাকা হবে,তখন ওযুর প্রভাবে তাদের মুখমন্ডল,হাত ও পা উজ্জ্বল হবে।সুতরাং তোমাদের প্রত্যেক যেন অবশ্যই তার উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।-*বোখারী ও মুসলীম*।

২.হযরত ওসমান(রাঃ) হইতে বর্নিত,হুজুর(সঃ) বলেছেন,আমার ওযুর মতন ওযু করে, অতঃপর পুর্ন মনোযোগ সহকারে এদিক-ওদিকের চিন্তা ভাবনা থেকে মনকে মুক্ত রাখা অবস্থায় দু রাকাআত নামায পড়ে(তাহহীয়াতুল অজু),তার অতীতের সকল গুনাহ(সগীরা) মাপ করে দেওয়া হয়।*বোখারী ও মুসলীম*।    
৩. হযরত সাইদ ইবনে যায়েদ(রা) বলেন,রাসুলুল্লাহ(সঃ) বলেছেন,যে ব্যক্তি ওযুর পূর্বে বিসমিল্লাহ পড়েনি তার ওযু হয়নি।*তিরমিজি ও ইবনে মাজাহ*।
৪. হযরত হুমরান বনর্না করেন যে,হযরত ওসমান(রাঃ) ওজুর জন্য পানি নিলেন এবং প্রথমে কব্জি পর্যন্ত উভয় হাত তিন তিন বার ধৌত করলেন।তারপর কুলি করলেন।তারপর নাকে পানি দিলেন এবং ভাল মতন পরিস্কার করলেন।তারপর তিনবার মুখ ধৌত করলেন।তারপর কনুই পর্যন্ত প্রথমে ডান ও পরে বাম হাত তিন তিন বার  করে ধৌত করলেন।তারপর মাথা মসেহ করলেন।তারপর টাকনু সহ প্রথমে ডান পরে বাম পা তিন তিন বার করে ধৌত করলেন।তারপর বল্লেন আমি রাসুল(সঃ) এই ভাবে ওজু করতে দেখেছি।*বোখারী ও মুসলীম*।
৫. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস(রাঃ) থেকে বর্নিত,এক বেদুইন রাসুলুল্লাহ(সঃ) এর নিকট ওজুর নিয়ম জানতে চাইল।তখন রাসুল(সঃ) তাকে তিন তিন বার সকল অঙ্গ-প্রতঙ্গ ধুয়ে ওযু করে দেখালেন।তারপর বল্লেন,এই হল ওযু।যে ব্যক্তি এর চেয়ে অতিরিক্ত করবে সে অনিয়ম,সীমালংঘন ও অন্যায় করবে।*নাসাই ও ইবনে মাজাহ*।
মাসয়ালা:-প্রত্যেক অঙ্গ-প্রতঙ্গ সর্ব্বোচ্চ তিনবার করে দোয়ার নিয়ম এরচেয়ে বেশী দোয়া নিয়ম নেই এবং একবার করে দৌত করলেও অজু হয়ে যাবে।
৬. হযরত লকীত ছাবুরাহ(রাঃ) বলেন,রাসুল(সঃ) বলেছেন,ভালভাবে ওযু কর,হাত পায়ের আঙ্গুল সমুহে খেলাল কর।আর যদি রোজা না হয় তাহলে ভালভাবে নাকে পানি পৌঁছাও।* নাসাই,ইবনে মাজাহ,তিরমিজি ও আবু দাউদ*।
৭.  হযরত ওসমান(রাঃ) বলেন,রাসুল(সঃ) ওযু করার সময় দাঁড়ি মোবারক খেলাল করতেন।*তিরমিজি ও বোখারী*
৮. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে যায়েদ(রাঃ) ওযুর বিবরন  দিতে গিয়ে বলেন,তারপর রাসুল(রাঃ) দু’হাত দিয়ে মাথা মসেহ করলেন।উভয় হাত দিয়ে শুরু করলেন মাথার সম্মুখ ভাগ থেকে এবং নিয়ে গেলেন ঘাড় পর্যন্ত।তারপর যেখান থেকে শুরু করেছিলেন সেখানে ফিরিয়ে আনলেন।*বুখারী*।
৯. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ(রাঃ) ওযুর বনর্নায় বলেন,রাসুল(সঃ) মাথা মসেহ করলেন এবং শাহাদাত আঙ্গুল দিয়ে কানের ভিতর ও বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে কানের বাহির মসেহ করলেন।*নাসাই*।
১০. হযরত আনাস(রাঃ) বলেন,রাসুল(সঃ) এক ব্যক্তিকে দেখলেন যে ওযু করার সময় তার পায়ে নখ পরিমান জায়গা শুকনা রয়ে গেছে।তখন তাকে বল্লেন,যাও পুনরায় ওযু করে আস।*আবু দাউদ ও নাসাই*।
মাসয়ালা:-ওযুর অঙ্গগুলোর মধ্যে কোন অঙ্গ শুকনো থাকলে ওযু হবেনা।
১১. হযরত মুগীরা ইবনে শোবা(রাঃ) বলেন,রাসুল(সঃ) ওযু করার সময় মৌজা এবং জুতায় মসেহ করেছিলেন।*তিরমিজি,ইবনে মাজাহ ও আবু দাউদ*।
১২. হযরত আলী(রাঃ) বলেন,নবী(সঃ) মুসাফিরের জন্য মৌজা এবং জুতায় মসেহ তিন দিন তিন রাত্রি এবং মুকিমের জন্য একদিন একরাত্রি অনুমতি দিলেন।*মুসলীম*।
মাসয়ালা:-অ-পবিত্র হয়ে গেলে মৌজার উপড় মসেহ করা চলবেনা।অর্থাত মৌজা খুলে ফেলতে হবে।
১৩. হযরত বুরায়দা(রাঃ) থেকে বর্নিত,নবী(সঃ) মক্কা বিজয়ের দিবসের সময় এক ওযুতে কয়েক ওয়াক্তের নামায আদায় করেছিলেণ।*মুসলীম*।
মাসয়ালাঃ- এক ওযুতে একের অধিক নামায পড়া জায়েজ।
১৪. হযরত আবু হুরায়রা(রাঃ) বলেন,রাসুল(সঃ) একদা ফজরের নামাযের পর হযরত বেলাল(রাঃ) থেকে জিজ্ঞাসা করলেন,হে বেলাল!ইসলাম গ্রহন ব্যতিত কোন নফল আমলের উপর তোমার বড় আশা হয় যে,তোমায় ক্ষমা করে দেওয়া হবে?কেননা আমি জান্নাতে আগে আগে তোমার চলার আওয়াজ শুনেছি।হযরত বেলাল(রাঃ) বললেন,আমি এর চেয়ে বেশী আশান্বিত কোন আমল করিনি যে,দিবা রাত্র যখনই ওযু করি তখন যা তৌফিক হয় নামায  পড়ি।*বোখারী ও মুসলিম*।
১৫. হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব(রাঃ) বলেন,রাসুল(সঃ) এরশাদ করেছেন,যে ব্যক্তি পুর্নভাবে ওযু করে এই দোয়া পড়বে“আশহাদু আল্লাই লাহা ইল্লাল লাহু ওয়েদাহু লাশরিকালাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মদান আব্দুহু ওয়া রাসুলুহু” সেই ব্যক্তির জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খোলা থাকবে যেটা ইচ্ছা হয় প্রবেশ করতে পারবে।*মুসলিম.আবু দাউদ ও তিরমিজি*।
১৬. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর(রাঃ) হইতে বর্নিত,নবী(সঃ) বলেছেন,যে ব্যক্তি ওযু থাকা অবস্থায় নতুন ওযু করে নেয় তার জন্যে দশটি নেকী লিখা হয়।-*তিরমিজি*
১৭. রাসুল(সঃ) বলেছেন,যখন কোন মুসলমান অযু করে এতে তার চেহারা ধৌত কওে তখন পানির সাথে তার চেহারা থেকে সকল গুনাহ বের হয়ে যায় যা তার চোখের দৃষ্টি দ্বারা সংঘঠিত হয়েছিল।যখন হাত ধৌত করে তখন হাতের সকল গুনাহ পানির সাথে বের হয়ে যায় যা তার হাতের দ্বারা হয়েছিল।যখন পা ধৌত করে তখন পায়ের দ্বারা যে সব গুনাহ করা হয়েছে তা বের হয়ে যায়।সে অযু থেকে ফারেগ হওয়ার সাথে সাথে সকল গুনাহ(ছগিরা)থেকে পাক ছাফ হয়ে যায়--মুসলীম শরীফ।
১৮. নবী (সঃ) বলেছেন,আমি কি তোমাদেরকে এমন বিষয় বলব না,যাদ্ধারা আল্লাহ তায়ালা গোনাহ মার্জনা এবং মর্যাদা উঁচু করেন?তা হল,মনে চায়না এমন সময়ে পূর্নরূপে ওযু করা,মসজিদের দিকে পা বাড়ানো এবং এক নামাযের পর আরেক নামাযের জন্য অপেক্ষা করা।এটা যেন আল্লাহর পথে জেহাদ করার জন্যে ঘোড়া প্রস্তুত রাখা---এহইয়াউ উলুমিদ্দিন।
অজুর ফরজ সমুহ:-১. সমস্ত মুখমন্ডল একবার ধোয়া।২ কনুই সহ উভয় হাত একবার ধোয়া।৩. মাথা মসেহ করা।৪. টাখনু সহ উভয় পা একবার ধোয়া।
বি:দ্র:-কোন ফরজ বাদ পড়লে অজু হবেনা।কিন্তু সুন্নত বাদ পড়লে অজু হয়ে যাবে তবে সুন্নতের সওয়াব থেকে মাহরুম হবে।
অজুর সুন্নত সমুহ:-
১-বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম বলে অজু শুরু করা।
২. কবজি সহ উভয় হাত তিন বার ধোয়া।
৩. কুলি করা।
৪. নাকে পানি দেওয়া।
৫. মেসওয়াক করা।
৬. সমস- মাথা একবার মসেহ করা।
৭. প্রত্যেক অঙ্গ তিন বার করে ধোয়া।
৮. কান মসেহ করা।
৯. হাতের আঙ্গুল সমুহ খেলাল করা।
১০. পায়ের আঙ্গূল সমুহ খেলাল করা।
১১. ডান দিক থেকে অজু শুরু করা।
১২. ক্বোরানে বর্নিত ধারাবাহিকতা রক্ষা করা।
১৩. গর্দান মসেহ করা।
১৪. অজু শুরুতে মেসওয়াক করা।
১৫. দুই কান মসেহ করা।
১৬. এক অঙ্গের পানি শুকানোর পুর্বেই অন্য অঙ্গ ধৌত করা।
বি:দ্র: পুরুষের ঘন দাড়ি থাকলে মুখমন্ডল ধোয়ার পর ভিজা হাতে তিন বার দাড়ি খিলাল করতে হবে।
অজুর মাকরূহ সমুহ।
১. অযুর সুন্নত সমুহের যে কোন সুন্নত ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দিলে অযু মাকরূহ হবে।
২. প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি ব্যয় করা।
৩. মুখমন্ডল ধৌত করার সময় সজোরে মুখে পানি নিক্ষেপ করা।
৪. বিনা ওজরে বাম হাত দ্বারা কুলি করা ও নাকে পানি দেওয়ার এবং ডান হাতে নাক পরিস্কার করা।
৫. অপবিত্র স্থানে অযু করা।
৬,. মসজিদের মধ্যে অযু করা,তবে কোন পাত্রের মধ্যে অযু করা জায়েয।
৭. কফ্‌কাশী বা নাকের ময়লা অযুর পানির মধ্যে নিক্ষেপ করা।
৮. বিনা কারনে অন্যের সাহায্য নেওয়া।
 অযুর প্রকারবেদঃ-অযু পাঁচ প্রকার ফরজ,ওয়াজিব,সুন্নত,মাকরূহ ও হারাম ওযু।
১. সকল প্রকার নামায পড়া ও কোরআন শরীফ তেলয়াতের জন্য এবং সেজদার তেলয়াতের জন্য অজু করা ফরজ।
২. কাবা শরীফ তওয়াফ করার জন্য ওয়াজিব।
 ৩. মোস্তাহাব বা সুন্নত ওযু হলো যা শরীর পাক রাখার জন্য করা হয় অর্থাৎ সব সময় ওজু রাখা সুন্নত।
৪. অযু করে কোন ইবাদত না করে সেই অযু থাকা অবস্থায় নতুন অযু করা মাকরূহ।
৫. হারাম অযু হলো কারো মালিকাধীন পানি জোরপুর্বক নিয়ে কিংবা ইয়াতীমের সংরক্ষিত পানি দিয়ে অযু করা হারাম।
অযু ভাঙ্গার কারন সমুহঃ-
১. প্রসাব-পায়খানা করলে।
২. পায়খানার রাস্তা দিয়ে বায়ু নির্গত হলে।
৩. /শরীরের কোন অংশ থেকে রক্ত বা পুঁজ বের হয়ে গড়িয়ে পড়লে।
৪. নিদ্রামগ্ন হলে।\
৫. মুখ ভরে বুমি করলে।
৬. নামাযের মধ্যে সশব্দে হাসলে।
সংখিপ্ত ভাবে অজু করার বর্ননা:-্‌বিসমিল্লাহ বলে অজু আরম্ভ করিতে হবে।প্রথমে দুই হাতের কব্জি পর্যন- তিনবার ধুতে হবে।তারপর মুখে পানি দিয়ে কুলি করতে হবে এবং মেছওয়াক করতে হবে।রোজা না থাকলে গরগরার সহিত কুলি করতে হবে।তারপর তিন বার নাকে পানি দিয়ে ভাল করে ধুতে হবে অর্থাৎ বাম হাতের আঙ্গুলি দিয়ে নাক পরিস্কার করে নিতে হবে। তারপর সম্পুর্ন মুখ মন্ডল তিনবার ধুতে হবে। তারপর প্রথমে ডান হাত এবং পরে বাম হাত কনুইসহ তিনবার করে ধুতে হবে। তারপর সমস- মাথা একবার মসেহ করতে হবে। তারপর তারপর দুই হাতের পিঠ দিয়ে ঘার মসেহ করতে হবে।সবশেষে প্রথমে ডান পা পরে বাম পা টাকনু সহ তিনবার করে ধুতে হবে।
মাসয়ালা:-
১. মুখমন্ডল ধোয়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন মাথার চুলের গোড়া থেকে থুতনি পর্যন্ত এবং এক কানের লতি থেকে অন্য কানের লতি পর্যন- ধোয়া হয়।দুই হাতের সাহায্যে ভালোভাবে মুখমন্ডল ধুতে হবে।খেয়াল রাখতে হবে যেন দুই ভ্রুর পশমের গোড়া পর্যন্ত পানি পৌছে।যদি মুখ এবং চোখ এরকম জোর করে বন্ধ করে রাখা হয় যাতে চোখের পাতা অথবা ঠোটের কিছু অংশ শুকনা থাকে তবে অজু হবেনা।
২. পুরুষগন মুখ মন্ডল ধোয়ার পর ভিজা হাতের আঙ্গুলি দিয়ে দাড়ি খেলাল করবে তবে তিনবারের বেশী খেলাল করবেনা।
৩. অজুর মধ্যে থুতুনি ধোয়া ফরজ।থুতুনিতে দাড়ি থাকুক বা না থাকুক।অর্থাৎ ইহা মুখমন্ডল ধোয়ার আওতায় পরে।
৪. মুখ বন্ধ করলে ঠোটের যে অংশ স্বাভাবিক ভাবে দেখা যায় সে অংশ ধোয়া ফরজ।
৫. হাতে আংটি থাকলে,মেয়েদের চুড়ি থাকলে এর নীচে পারি পৌছাতে হবে।নাকের নথের নীচের চামড়াতেও পানি পৌছাতে হবে।
৬. নখের ভিতর আটা বা চুন ঢুকে শক্ত হয়ে থাকার কারনে যদি নখের ভিতরে পানি না যায় তবে আটা বা চুন বের করে সেখানে পানি পৌছাতে হবে।
৭. এক অঙ্গ ধোয়ার পর আর এক অঙ্গ ধুতে এত দেরী করা ঠিক হবেনা যাতে ইতিমধ্যে প্রথম অঙ্গ শুকিয়ে যায়।
৮. প্রত্যেক অঙ্গ ধোয়ার সময় ভাল করে ঘষে মেজে ধোয়া জরুরী।
৯. হাতের পায়ের নখে পালিশ থাকলে তা প্রথমে তুলে ফেলে ওযু করতে হবে।
১০. ওযু করার পর যদি দেখা যায় হাতের বা পায়ের কোন অংশ শুকনা রয়ে গেছে তাহলে সেখানে পানি প্রবাহিত করে দিতে হবে।শুধু ভিজা হাতে মুছলে হবে না।
১১. ওযু করার সময় দুনিয়ার কথাবার্তা বলা,নাপাক স'ানে বসে ওযু করা মাকরুহ।
যে সব কারনে ওযু নষ্ট হয়।
১. প্রসাব বা পায়খানা করলে।
২. পায়খানার রাস-া দিয়ে বায়ু বা অন্য কিছূ নির্গত হলে।
৩. শরীরের কোন অংশ থেকে রক্ত বা পুজ বের হয়ে গড়িয়ে পড়লে।
৪. নিদ্রাভিভুত হলে অর্থাৎ কাত হয়ে বা হেলান দিয়ে কিংবা এমন কিছুতে ঠেস দিয়ে যে,তা সরিয়ে নিলে সে পড়ে যাবে।
৫. মুখ ভরে বমি করলে।
৬. নামাযের মধ্যে শব্দ করে হাসলে।
৭. পাগল বা মাতাল হলে।
৮. কারো নাক দিয়ে কোন কিছু ঢুকে মুখ দিয়ে বের হলে।
৯. যদি মুখ দিয়ে থুথুর সাথে রক্ত বের হয় এবং থুথুর চেয়ে রক্তের পরিমান বেশী বা সমান হয় তাহলে ওযু ভেঙ্গে যাবে।
১০. স্ত্রীকে কাম ভাব সহকারে স্পর্শ করলে ওযু ভঙ্গ হয়ে যাবে।
১১. লজ্জা স্থানে বিনা আবরনে হাত পড়লে ওযু ভঙ্গ হয়ে যাবে।
মাসয়ালা
১. কোন কিছুর আঘাতে বা মেসওয়াকের কারনে থুথুর সাথে রক্ত দেখা গেলে ওজূ যাবেনা।যতক্ষন না রক্ত প্রবাহিত হয়ে মুখ থেকে বের হয়ে আসে।
২. স্ত্রী-স্বামীকে  কিংবা স্বামী-স্ত্রীকে স্বাভাবিক ভাবে স্পর্শ করলে(কাম ভাব ব্যতিত)ওযু নষ্ট হয় না।
৩. লজ্জা স্থানে কোন কাপড়ের উপর দিয়ে হাত পড়লে বা নজর পড়লে ওযু নষ্ট হয় না।
৪. কারো ওযু ছিল হঠাৎ সন্দেহ হলো যে,ওযু আছে কি নাই।এই অবস্থায় ওযু আছে বলে ধরে নিতে হবে।তবে নতুন ওযু করে নেওয়াই উত্তম।
৫. কারো ওযু ছিলনা পরে ওযু করেছে কিনা তা সন্দেহ হলে এই অবস্থায় ওযু করে নিতে হবে।
তায়াম্মুমঃ-“অতঃপর পানি না পাও তবে তোমরা পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও অর্থাৎ স্বীয় মুখ মন্ডল ও হস-দ্বয় মাটি দ্বারা মুছে ফেল”।--মায়িদা-৬।
      হযরত আম্মার ইবনে ইয়াসের(রাঃ) হইতে বর্নিত,নবী করিম(সঃ) আমাকে একটি কাজে পাঠিয়েছিলেন,তথায় আমার স্বপ্ন দোষ হয়েছিল।আমি পানি পাচ্ছিলামনা।তখন আমি গোসলের জন্য তায়াম্মুমের নিয়তে চতুষ্পদ জন-ুর ন্যায় কয়েক বার এদিক সেদিক মাটিতে গড়াগড়ি করলাম।অতঃপর নবী করিম(সঃ) এর কাছে ঘটনা বললাম,নবী(সঃ) আমাকে বললেন,তোমার জন্য এইটুকু যথেষ্ট হয়ে যেত যে,পবিত্র মাটিতে একবার হাত মারিয়া উভয় হাত এবং মুখমন-লকে মসেহ করে ফেলতে।অতঃপর হুজুর(সঃ) তা করে দেখালেন।*বোখারী ও মুসলীম*।
তায়াম্মুমের ফরজ সমুহ
১. নিয়ত করা।
২. সমস্ত মুখমন্ডল একবার মসেহ করা.
৩. দুই হাত কনুইসহ একবার মসেহ করা।
যেই সুমস্ত কারনে তায়াম্মুম করা যায়
১. পানি ব্যবহারের কারনে যদি কোন অসুস্ত ব্যক্তির রোগ বৃদ্ধির আশংকা থাকে।
২. পানি ব্যবহারের কারনে যদি রোগ মুক্তি বিলম্বিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
৩. অত্যাধিক শীতের সময়ে পানি ব্যবহারের কারনে প্রাননাশের বা রোগাত্রুান- হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে।তবে এই ক্ষেত্রে পানি গরম করে ব্যবহার করা উত্তম যদি পানি গরম করার অবস্থাও না থাকে তবে এক্ষেত্রে তায়াম্মুম করা যাবে।
৪. যদি একান-ই পানি না পাওয়া যায় কিংবা এক মাইল পথ পাড়ি দিতে হয় পানির জন্য তবে তায়াম্মুম করা যাবে।
৫. পানি সংগ্রহ করতে গেলে যদি শত্রু র্কতৃক আত্রুান- হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
৬. হায়েয-নেফাস শেষে পানি ব্যবহারে অক্ষম হলে।
৭. যদি পানি কিনতে হয় এবং পানি কেনার পয়সা সাথে না থাকে।
৮. সঙ্গে যে পানি আছে সে পানি ব্যবহার করলে যদি পানি পিপাসায় জীবন হানির আশংকা থাকে।
যেই সব কারনে তায়াম্মুম ভঙ্গ হয়
যেই সমস্ত কারনে ওযু ভঙ্গ হয় সেই সমস্ত কারনে তায়াম্মুমও ভঙ্গ হয়।